লেখক-কবিদের ইন্টারভিউ, চ্যালেঞ্জ-৩
লেখক-কবিদের
ইন্টারভিউ চ্যালেঞ্জ-৩
ছয়টি কঠিন
প্রশ্নের মুখোমুখি
আজকের লেখক সৈয়দ
মাসুদ মোস্তফা
(সাক্ষাৎকার
গ্রহণ করেছেন মোস্তফা সোহেল)
(লেখকের জন্ম ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জয়পুরহাট
জেলার সদর উপজেলার পূর্ব সুন্দরপুর গ্রামে। উচ্চশিক্ষা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে।
কবিতার মাধ্যমে তার সাহিত্যে অঙ্গনে পদার্পন। তার লেখা প্রথম কাব্য ‘ভোরের পাখি’।
তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, রম্য, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণকাহিনী, নাটক ও
গান রচনায় বেশ সাবলীল। লেখকের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘মেঘে মেঘে বেলা’, ছোট গল্প
‘কুহক’, নাটক ‘অবলীলায়’। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘তুলসীগঙ্গার তীরে’! তার লেখা
উপন্যাসের সংখ্যা ১৮ এবং গান হাজারেরও বেশি। শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনে শুরু
করলেও পরবর্তীতে তিনি সাংবাকিতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। প্রায় দুই যুগ ধরে দেশীয় ও
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে নিয়মিত লিখছেন ।
ব্যক্তি জীবনে লেখক বিবাহিত এবং ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক)
১. আপনার লেখালেখি ও বইয়ের নাম সহ সংক্ষিপ্ত
আকারে বলুন।
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ লেখালেখিতে হাতে খড়ি ১৯৮০ সাল থেকে। তখন আমি ক্লাস ফোরে পড়তাম।
‘ভোরের পাখি’ কবিতা দিয়ে। সেই শুরু; আর কখনো থেমে যাইনি। পরবর্তীতে গল্প, প্রবন্ধ,
স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ কাহিনী, রম্য, উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীতের ওপর নিয়মিত কাজ করছি।
আমার প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘মেঘে মেঘে বেলা’, গল্প ‘কুহক’, রম্য ‘আয়না বুড়ির
বিয়ে’, প্রবন্ধ ‘আমাদের দেশের শিক্ষা সঙ্কট’ শিশুতোষ গল্প ‘দাদু ভাই’ এবং নাটক
‘অবলীলায়’। জয়পুরহাট থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বালিঘাটা’ পত্রিকার সম্পাদক বন্ধুবর
দিলদার হোসেন আনসারীর প্রেরণায় আমি সংবাদপত্রে নিবন্ধ লেখা শুরু করি ১৯৯৯ সাল
থেকে। আর সে সময় থেকেই বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক জার্নালে
গবেষণামূলক প্রবন্ধ/নিবন্ধ নিয়মিত ভাবেই প্রকাশিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন
পত্র-পত্রিকায় আমার প্রকাশিত লেখার সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার।
২. আপনি যদি না লিখতেন বাংলা সাহিত্যের কী কোনো
ক্ষতি হতো ?
ক্ষতি হতো ?
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ আমার বোধ-বিশ্বাস, আবেগ-অনুভূতি ও মূল্যবোধ পাঠকদের কাছে
উপস্থাপনের জন্যই আমি লিখি। এতে আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ উপকৃত হয়েছি বলে মনে করি।
কারণ, সাহিত্য আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে। আর আমার লেখালেখির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য
বা সাহিত্য অনুরাগীরা কতখানি লাভ-ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বা আমি না লিখলে সাহিত্য
কোন ক্ষতির সম্মূখীন হতো কি না তা মূল্যায়নের দায়িত্ব সমঝদার পাঠকদের ও
সাহিত্যপ্রেমীদের; আমার নয়। তবে আমি বাংলা সাহিত্যের কোন উপকার করতে পেরেছি বলে
মনে করি না।
৩. কখনও কি মনে হয় লেখালেখি করে খামাখা সময়
নষ্ট করছেন ?
নষ্ট করছেন ?
সৈয়দ মাসুদ মোস্তফাঃ লেখালেখিতে সময় নষ্ট হয় বলে মনে করি না বরং এতে
আরও বেশি সময় দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। আমি চেষ্টা করি পাঠকদের ভাল কিছু উপহার
দেয়ার জন্য। কিন্তু আমার নিজের লেখা বারবার পড়ে এবং সংশোধন করে নিজেই সন্তষ্ট হতে
পারি না। মনে হয় লেখাটা ভাল হয়নি। মনে হয় পর্যাপ্ত সময় দিতে পারিনি। কিন্তু
পত্রিকার পাতা জুড়ে যখন আমার লেখাটা শোভা পায় তখন মনে হয় কিছু একটা হয়েছে। প্রেরণা
পাই।
৪. আসলে কেনো লেখেন ?
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ আগেতো রীতিমত
সৌখিন লেখক ছিলাম। বয়সের পূর্ণতায় মনে হয়েছে মানুষের জন্য কাজ করা দরকার। আর যার
যা সামর্থ আছে সে সামর্থ নিয়েই মানুষের জন্য কাজ করা উচিত। তাই নিজের বোধ-বিশ্বাস,
আবেগ-অনুভূতি, মূল্যবোধ-সংস্কৃতি লেখনীর মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সুন্দর ও
সুকুমার বৃত্তিকে উৎসাহিত করাই আমার লেখার উদ্দেশ্য।
৫. লেখালেখির কারণে কোনো সম্মাননা, পুরস্কার,
মুল্যায়ন ?
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ জি না ! কোন
সম্মাননা পাইনি। আর সম্মাননা পাওয়ার মত সাহিত্য ক্ষেত্রে কোন অবদান রাখতে পেরেছি
বলে নিজেই মনে করি না।
৬. নিজের লেখক জীবন নিয়ে সক্ষেপে মূল্যায়ন
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ লিখছি তো নিজের
উপলব্ধি মত। ক্ষুধা, দারিদ্র, পাপ-পঙ্কিলতা ও কদর্যতামুক্ত এবং বৈষম্যহীন সুন্দর
এক নতুন বিশ্বের প্রত্যাশায়। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস অণুতুল্যও নয়। কিন্তু থেমে
গেলে তো চলবে না। কালের গতিধারায় অণুই একদিন বিন্দু এবং বিন্দুই হয়তো সিন্ধুর রূপ
নেবে। হয়তো সেদিন আমি থাকবো না।
৭. আপনাকে ধন্যবাদ।
সৈয়দ মাসুদ
মোস্তফাঃ আপনাকেও অসংখ্য
ধন্যবাদ।
(সাক্ষাৎকার
গ্রহণ করেছেন মোস্তফা সোহেল )
No comments
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।